কালিয়াচক

নিজ ভুমিতে পরবাসী ভোটারদের মাঝে বিজেপি প্রার্থীর ভোট প্রচার

 

কালিয়াচক থানার অন্তর্গত ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে বিস্তৃর্ণ এলাকা রয়েছে কাঁটা তারে ঘেরা। কাঁটাতারের ওপারে রয়েছে ভারত ভূমিতে কয়েকশো ভোটার। তারা প্রতিটি ভোটে অংশ গ্রহন করেন, কিন্তু কখনও তারা প্রার্থীদের দেখেন নি যে তাদের কাছে ভোট প্রচার বা তাদের সাথে কথা বলতে এসেছেন। তারা কখনও তাদের সুবিধা অসুবিধার কথা বলতেও পারেন নি। প্রতিদিন তারা বিএসএফ গেট খুললে এপারে এসে পানীয় জল, রুজি রোজগার করেন। এদিন সীমান্ত কাঁটাতারের ওপারে ভোট প্রচার করলেন মালদহ দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী।

    এই কেন্দ্রের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রয়েছে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটাতার। আর কাঁটাতারের ওপারে বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা আজও নিজ ভুমিতে পরবাসী হয়ে রয়েছেন। স্বাধীন ভারতের নাগরিক হয়েও দুই দেশের সীমান্ত কাঁটাতার প্রায় ৩০০টি পরিবারকে পরাধীন করে রেখেছে। কার্যত বন্দী জীবনযাপন করছেন সীমান্ত কাঁটাতারের ওপারে ৩০০টি পরিবার।

    এই গ্রামে একসময় বসবাস করতেন প্রায় এক হাজারের বেশী পরিবার। সীমান্তে কাঁটাতার দেওয়ার পর আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল পরিবার গুলি এপারে চলে এসেছেন। কিন্তু আজও আর্থিক ভাবে দুর্বল প্রায় ৩০০টি পরিবার রয়ে গেছে কাঁটাতারের ওপারে। সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর নিয়মমত খোলা হয় সীমান্তের দরজা। আর বন্ধও হয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর নিয়মে। দিনের কয়েক ঘন্টার মধ্যে এই এলাকার বসবাসকারীদের নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় সামগ্রী সহ রুজি রোজগারের ব্যবস্থা করতে হয়। সেই সময়েই বাড়িতে খাওয়ার জলটুকুও নিয়ে যেতে হয়।

    এবারে এই এলাকায় ভোট প্রচারে গিয়ে বিজেপি প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন মানোয়ারা বিবি, সহ একাধিক বাসিন্দাদের এমন জীবনের জন্য দায়ী এলাকার সাংসদ তথা কংগ্রেস নেতা আবু হাসেম খান চৌধুরী। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে এই এলাকার সাংসদ একই পরিবারের সদস্যরা। তারা ভোটে জিতে এলাকার খবর রাখেন না। তাই আজকের দিনে এমন করুণ পরিস্থিতিতে রয়েছেন বসবাসকারী বাসিন্দারা। শুধু তাই নয়, তৃণমূল কংগ্রেসকেও একই ভাবে কাঠগড়ায় তুলেছেন শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। তাঁর দাবী, এলাকার সাংসদ ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে সরব হয়ে সমস্যা সমাধান করতে পারতেন। কিন্তু তাঁরা নীরবেই থেকেছেন। এলাকায় একটি আইসিডিএস সেন্টার নেই। নূন্যতম পরিসেবা নেই এলাকায়। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মাধ্যমে মাথার ছাদ হয়নি। প্রধানমন্ত্রী জল জীবন মিশনের মাধ্যমে পানীয় জলের সুব্যবস্থা করা যেত। কিন্তু তাও করা হয়নি।ফলে স্বাধীন ভারতের নাগরিক হয়েও তারা রয়েছেন পরাধীন ভাবে। এর দায় কেবল এলাকার নির্বাচিত  শাসকদলের প্রতিনিধি ও কংগ্রেস দলের সাংসদের।

 

    জেলা কংগ্রেসের সহ সভাপতি অর্জুন হালদার বলেন, যিনি অভিযোগ করছেন তার আগে নিজের মুখ আয়নায় দেখা উচিত। তিনি তো ইংরেজবাজারের বিধায়ক। তিন বছর পার হয়ে গেছে, তিনি তিন বছরে কি কাজ করেছেন সেই প্রশ্ন তোলা উচিত আগে। এলাকার মানুষ বলছে তিনি এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগটুকু রাখেন নি। কাজ তো দুরের কথা। আবু হাসেম খান চৌধুরী এমপি হয়েছেন পরপর তিনবার, কাজ করেছেন বলেই হয়েছে। কি কাজ করেছেন তার জবাব মানুষ দেবে। যারা কাজ করবেন না এলাকার মানুষ তারও জবাব দেবে। সুতুরাং তিনি যে কাজ করেছেন এটাই প্রমান। কে কি বলল তাতে যায় আসে না। এর জবাব কাগজে কলমে দেবেন।

 

    জেলা তৃণমুল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি দুলাল সরকার বলেন, রাজ্য সরকার যদি কিছু না করে তাহলে রাজ্য সরকারের পাশে এত মানুষ থাকে কি করে। উনি চমক দিয়ে রাজনীতি করেন এর আগে ধর্মের নামে ভোট করেছেন। এবার মানুষ তার পাশে থাকবে না।